
হালচাল ৮ম সংখ্যা – ৩য় বর্ষ (অক্টোবর ২৪)
- প্রকাশনী : ওয়াফি পাবলিকেশন, হালচাল
- বিষয় : ইসলামি ম্যাগাজিন, ম্যাগাজিন
কভার : পেপারব্যাক
100.00৳
তারুণ্যের শক্তি; যা আর ব্যাখ্যার দাবি রাখে না। তারুণ্যেই শক্তি, তারুণ্যেই মুক্তি; যুগ পরম্পরায় প্রবাহমান এ স্লোগান এখন সুস্পষ্ট। তরুণরাই আগামী দিনের ভবিষ্যত। সর্বকালেই তারুণ্য বিজয় ছিনিয়ে আনে। দীপ্ত মনোবল, অদম্য সাহস, তেজোময় স্পৃহা, একনিষ্ঠতা ও লক্ষ্যে পৌঁছার নিঃস্বার্থ পদক্ষেপ; সবই তারুণ্যের বৈশিষ্ট্য—যা সফলতার শক্তি। ব্যক্তি, সমাজ, জাতি, ধর্ম ও পৃথিবীর সৎ-অসৎ যত সফলতা, ছোট বড় যত বিজয়, মুক্তির উদ্যম হাওয়া যত প্রান্তরে প্রবাহিত, প্রতিটির পিছনে অসামান্য অবদানে তারুণ্য। আবার এই উদ্যমমাখা অবদান ও সাফল্য লিপিবদ্ধ হয় কোনো তরুণের দ্বারাই। সঞ্চারিত হয় শত তরুণের ধমনিতে।
সকল বাধা পেরিয়ে অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে গর্জে ওঠে এ তারুণ্যই। বৃদ্ধের প্রজ্ঞা, পরামর্শ আর তারুণ্যের শক্তি একটি জাতির সমৃদ্ধি অর্জনের সবচেয়ে বড় অস্ত্র।
পৃথিবীর ইতিহাসে তারুণ্যই পারে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কাতারবন্দি হতে। এক বোনের চেহারা রক্তাক্ত জেনে দ্রোহে কেঁপে উঠতে। তরুণরাই পারে সতেরো বছরের পুঞ্জিভূত ক্ষোভে বিস্ফোরিত হতে। তরুণরাই পারে জগদ্দল পাথরকে কনিষ্ঠাঙুল দেখাতে। আত্মসম্মানের কিঞ্চিত বাক্যে দুলে উঠতে। রাজপথে দাঁড়িয়ে দ্বিধাহীন বুকে বৃদ্ধ ও প্রৌড়ের রক্তে শিহরণ জাগাতে। পারে বিবেকের প্রত্যাবর্তন ঘটাতে। পারে ‘পানি’ বলে অতি সাধারণ ডাকে কোটি হৃদয়ে প্রাণ ঝরাতে। জুলুমের গদিতে কাঁপন ধরাতে। পারে খুনের বুকে দাঁড়িয়ে মায়ের থেকে শহিদি বিদায় নিতে। শুধু তারুণ্যই পারে এক ফোটা রক্তের বদলে হাজারো বুকের রক্ত বিলাতে।
•
বাংলা প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে আজ তক তারুণ্যের অবদান অপরিসীম। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৬৬-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধ, ৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন এবং সর্বশেষ ২৪ এর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তরুণদের সাহসী উচ্চারণ আমাদের প্রেরণার হাতিয়ার।
তরুণরা জাগলে, জাগবে দেশ, মুক্তিপাবে বাংলাদেশ। যখনই কোনো দিগন্তে বৈষম্যের কালো মেঘ জমতে চাইবে; সুপ্ত, নির্লিপ্ত, ভীতু ও সুপ্রসন্ন ভাগ্য না দেখে বলে উঠবে অন্যায়ের কথা। দায়িত্ব, নেতৃত্ব, জ্ঞান ও প্রজ্ঞায় যথাযথ স্বাক্ষর করবে ইতিহাসের পাতায়।
•
তবে ইতিহাস প্রাণীটি স্বার্থপর। ছলনা বা প্রতিপত্তির বশীভূত। জাতিগত বিপ্লব, ধর্ম ও শ্রেণিভেদে নিজেকে বিলুপ্ত করে ফেলে। কালের অতল গহ্বরে লুকিয়ে যায়। ফলে জাতির অস্তিত্ব রক্ষার অস্ত্র মুছে যায়। কিন্তু ইতিহাস হলো একটি জাতির বেঁচে থাকার পথপ্রদর্শক। মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর বা আবারও জ্বলে ওঠার চেরাগ। ইতিহাস অস্তিত্ব, ইতিহাস সত্ত্বা, ইতিহাস অস্থি ও মজ্জা।
অতীতকে বোঝা, জানা এবং অতীতের সাথে পরিচয় হওয়ার অবলম্বন। অতীতের অভিজ্ঞতা এবং ঘটনাগুলি থেকে বোঝা ও শেখা, যা পূর্ববর্তী প্রজন্মের ভুল এবং সাফল্যের মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে। যা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ঢাল। ইতিহাস ব্যক্তি এবং সামষ্টিক পরিচয় গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, স্বত্ব ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অনুভূতিতে অবদান রাখে।
কিন্তু কাগজের বুকে অঙ্কিত অতীতের চেতনা, স্বার্থ ও পক্ষপাত এখন দিবালোকের ন্যায় স্বচ্ছ।
ইতিহাস সংরক্ষণের অনুভূতির সংকটে বিকৃত ইতিহাস এখন আমাদের দিনরাতের পাঠ্য ও যাচাইয়ের নিক্তি। তবে নিষ্ক্রিয় এ কাঠখোট্টা বেষ্টনী ভেদ করছে তরুণ গবেষক ও নতুন প্রজন্ম। মণি-মুক্তো, হীরা-জহরত সিঞ্চন করে আনছে সাত সাগর তেরো নদী।
এমনকি অপরিবর্তনীয় এবং স্বার্থে মোড়া এক ইতিহাসের সমাধী রচনা করেছে তারা। নির্মাণ করেছে নতুন ইতিহাস। আর এ ইতিহাসকে চির অম্লান করতে গেঁথেছে দুর্মোচ্য দেয়ালে। এ কাজ অকিঞ্চিৎ আঞ্জাম দিবে হালচাল। এ সংখ্যায় তারুণ্যের মেধা-মনোবল, দ্রুততা-দূরদর্শিতা উপলব্ধি করবে পাঠক প্রতি পরতে। অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কত মসৃণভাবে এঁকে ফেলেছে তারা। কত সহজভাবে গেঁথে ফেলেছে। যা যুগ যুগ ধরে প্রবাহমান ঝরণা হয়ে সিঞ্চিত করবে দর্শনার্দীদের। আগামী প্রজন্মের আলোকবর্তিকা– জানা-বোঝার প্রসঙ্গ, তথ্য ও বর্ণনা—একটি ইতিহাস সংরক্ষণে যা প্রয়োজন, কালের সাক্ষী করে রেখেছে একেকজন। মূলত এই অবিকৃত, মসৃণ, নিরলস বর্ণনা ও তথ্য যাচাইয়ে সবিশেষ নজর দিয়েছে হালচাল। পরিশেষে যে কথাটি না বললেই নয়, অকাট্য প্রয়োজনীয় এ কাজ আঞ্জাম দিতে গিয়ে মনে হয়েছে ইতিহাসের দলিল। যা এক জাতিকে পথপ্রদর্শন করবে। হয়ত খুব শীঘ্রই আরও সংস্করণ হবে। আমাদের অপারগতা, অপূর্ণতার যে দেয়াল তুলে ধরলাম এ সংখ্যায় বানানশুদ্ধি ও সম্পাদনার ঘাটতি। কাটিয়ে তুলব খুব শীঘ্রই নতুন সংস্করণে।
স্বতস্ফূর্ত জমাকৃত রচনার সংখ্যা ৩০০+
তথ্য ও গ্রহণযোগ্যতার দিকে নজর দিতে কলেবর সমস্যা না থাকায় বানান ও সম্পাদনায় যে সময় গিয়েছে তা ছিল খুবই অপ্রতুল।
মূলত আফসোসের ব্যাপার হলো এই আমাদের নবীনরাই লিখে আসছেন শুধু হালচালেই কত কত দিন ধরে। আত্মসমালোচনায় গেলে সেই বেখেয়ালি ও অবহেলিতই মনে হচ্ছে এখনো—যা সাময়িকীতে লেখা চয়নের অন্তরায়। যে দোষ কর্তৃপক্ষ বয়ে আসছে যুগ যুগ।
তবু চাই এ সংখ্যায় উঠে আসুক প্রয়োজন।
হয়ত এ সংখ্যায় বাদ পড়া আরও কোনো গুরুত্বপূর্ণ লেখাও সামনের সংস্করণে যুক্ত হতে পারে। সর্বোপরি, এ খেদমত আঞ্জাম দিতে হালচাল খুবই নগন্য।
•
“হালচাল” নবীন ও তরুণদের সাহিত্য সাময়িকী। সেই প্রেরণা থেকেই পথচলা।
এই পথচলায় অনেকের অনেকভাবে অবদান রয়েছে।
কেউ লেখক হিসেবে, কেউ পাঠক হিসেবে, কেউ সহযোগী হিসেবে যে যেভাবে সহযোগিতা করেছেন, সঙ্গ দিয়েছেন সবার প্রতি “হালচাল” টিম কৃতজ্ঞ। বিশেষ কৃতজ্ঞতা ওয়াফিলাইফ ডটকমের প্রতি। যারা এ পথচলায় বিশেষ সঙ্গী হয়েছেন।
এই অল্প সময়ের ব্যবধানে নবীনদের সহযোগিতায়, প্রবীণদের দিকনির্দেশনায় হাঁটি-হাঁটি, পা পা করে এগিয়ে যাচ্ছে “হালচাল”। তৃতীয় বর্ষে পদার্পণ করে এবারের বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করেছে ’২৪ এর কোটা আন্দোলনকে ঘিরে।
আশা করি সবাই এভাবেই আমাদের পাশে থেকে লক্ষ্যে পৌঁছার সুযোগ করে দিবেন ইনশাআল্লাহ
Reviews
There are no reviews yet.