
সুদ সমস্যা ও সমাধান
- লেখক : মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ খন্দকার
- প্রকাশনী : বাংলাদেশ ইসলামিক ল রিসার্চ এন্ড লিগ্যাল এইড সেন্টার
- বিষয় : ইসলামি অর্থনীতি ও ব্যবসা বাণিজ্য
পৃষ্ঠা : ২০৮
কভার : পেপারব্যাক
300.00৳ Original price was: 300.00৳ .216.00৳ Current price is: 216.00৳ . (28% ছাড়)
জনাব মুঃ ফরীদ উদ্ দীন আহমাদ-এর অভিমত মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ খন্দকার রচিত ‘সুদ : সমস্যা ও সমাধান’ শীর্ষক গ্রন্থটি সম্পর্কে অভিমত প্রকাশের সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত। শ্রমসাধ্য এ কাজটি করার ক্ষেত্রে লেখকের পেশাদারি অবদানের জন্য তাকে আন্তরিক মোবারকবাদ। ফরয ইবাদতসমূহের পরেই হালাল জীবিকা অর্জন করাও একটি ফরয। এ ক্ষেত্রে ইসলাম কিছু বিধি-বিধান নির্ধারণ করে দিয়েছে। আর্থিক লেনদেনে সততা,স্বচ্ছতা,অঙ্গীকার পূরণ করা,যাকাত দেওয়া,ভালো সেবা প্রদান করার ওপর ইসলামি শরী‘আহ্ ব্যাপক গুরুত্ব দিয়েছে। বিপরীতে সুদ,জুয়া,ধোঁকা,প্রতারণা,মজুতদারি,খাদ্যে ভেজাল মেশানো,মাপে কম দেওয়া,মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রি করা ইত্যাদি সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করেছে। বিশেষ করে সুদের ব্যাপারে ইসলামে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। প্রধান প্রধান ধর্ম এবং প্রখ্যাত দার্শনিক,অর্থনীতিবিদ ও গবেষকগণ সুদের বিরূপ প্রভাব ও ক্ষতি সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন। কিন্তু তারা সুদের বিকল্প সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দেননি। মহাগ্রন্থ আল-কুরআন ও সুন্নাহতে সুদের বিকল্প কী হতে পারে সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট ঘোষণা রয়েছে। যেমন সুদ নিষিদ্ধ-সংক্রান্ত আয়াতেই এর বিকল্প হিসেবে ব্যবসা-বাণিজ্যের উল্লেখ রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে সুদ নয় বরং ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্যেই অর্থনৈতিক কল্যাণ রয়েছে। প্রাচীনকাল থেকেই সম্পদ অর্জনের বৈধ মাধ্যম হিসেবে কেনাবেচা একটি স্বীকৃত পদ্ধতি। কেনাবেচার মাধ্যমে প্রকৃত সম্পদের হাতবদল ঘটে,যা যুৎসই অর্থনীতি গড়ে তুলতে সহায়ক। অন্য দিকে সুদভিত্তিক লেনদেন পদ্ধতি সকল অনর্থের মূল। সুদ অর্থনৈতিক সংকট ও মন্দা সৃষ্টির প্রধান উপাদান। সুদ ও সুদের হারের বদৌলতে ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পব্যবস্থা স্বাভাবিক ও স্বচ্ছন্দ গতিতে চলার পরিবর্তে মন্দার চক্রে পড়ে যায়। ফলে তা বারবার অর্থনৈতিক সংকট ও বিপর্যয়ের শিকারে পরিণত হয়। এ থেকে পরিত্রাণের উপায় হলো ইসলামী অর্থনীতির চিরন্তন নীতি-আদর্শ অনুসরণ ও ইসলামী ব্যাংকিং ও ফাইন্যান্সের মোড ও পদ্ধতি অনুশীলন করা। মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ খন্দকার ‘সুদ : সংকট ও সমাধান’ গ্রন্থে ১৩টি অধ্যায়ে ভাগ করে তার আলোচনা বিন্যস্ত করেছেন। আলোচনা বিষয়গুলো হলো রিবা বা সুদের ধারণা,রিবার প্রকারভেদ,রিবার ‘ইল্লত’ বা কারণ,কুরআন ও সুন্নাহ্র দৃষ্টিতে রিবা,রিবার হুকুম বা বিধান,অন্যান্য ধর্ম,মতবাদ ও সংস্কৃতিতে সুদ,সুদের ইতিহাস,রিবা নিষিদ্ধকরণের তাৎপর্য ও যৌক্তিকতা,রিবা এর কুফল,রিবহ বা মুনাফা,সুদ হারাম বিতর্ক : যুক্তি ও পাল্টা যুক্তি,অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণ,অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানে ইসলামের কৌশলসমূহ। সুদের আলোচনায় সবচেয়ে জটিল বিষয় হলো এর ইল্লত সম্পর্কিত আলোচনা। এ গ্রন্থে তিনি প্রসিদ্ধ চার মাযহাবের দৃষ্টিতে সুদের ইল্লতগুলো কি তা ফিকহি দৃষ্টিকোণ থেকে সহজ-সরলভাবে তুলে ধরেছেন। শরী‘আহ বিশেষজ্ঞগণের পাশপাশি সাধারণ পাঠকও তা থেকে উপকৃত হবেন বলে আমার বিশ্বাস। ইতোমধ্যে সুদের ওপর বাংলা ভাষায় অনেক গ্রন্থ রচিত হয়েছে। কিন্তু এ গ্রন্থের স্বাতন্ত্র্য হলো টেকসই,স্থিতিশীল ও কল্যাণধর্মী অর্থনীতি বিনির্মাণে সুদের বিকল্প হিসেবে ইসলামের চিরন্তন কৌশলগুলো ব্যাখ্যা করা। কাজটি জটিল ও কষ্টকর হলেও মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ খন্দকার এ কঠিন কাজে নিপুণতার স্বাক্ষর রেখেছেন। গভীরতার দিক থেকে বইটি খুবই সমৃদ্ধ। এর ভাষা প্রাঞ্জল ও সাবলীল। বইটির বিষয়বস্তু সাধারণ পাঠক,শিক্ষার্থী,পেশাদার ব্যাংকার ও গবেষকদের অনুসন্ধিৎসুতা ও প্রয়োজন মেটাবে বলে আমি মনে করি। এ গ্রন্থের বহুল পাঠকপ্রিয়তা এবং জ্ঞান-গবেষণার জগতে গ্রন্থকারের অব্যাহত অগ্রযাত্রার জন্য কায়মনোবাক্যে আল্লাহ্র কাছে দু‘আ করি।
Reviews
There are no reviews yet.